বিশ্বকাপ উম্মাদনা এবং মুসলিম অভিবাবকদের করণীয়
সকল প্রশংসা আল্লাহ সুবহানা তাআলার এবং দরুদ ও সালাম নাযিল হোক রাসূল (ﷺ) এর উপর। একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয়ে নিজেকে এবং আমার ভাইদের উপদেশ দেওয়ার জন্য এই লিখা। বিষয়টি আগত ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে উম্মাদনা থেকে আমাদের সন্তানদের আগলে রাখা নিয়ে।
আমরা যারা দ্বীনের পথে চলার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়েছি, তারা অনেকেই অনেক হারাম বিষয় থেকে নিজেকে এখনো পুরোপুরি সরিয়ে আনতে পারিনি। কিন্তু দ্বীনের পথে অবিচল থাকার একটি চিহ্ন হল কোন বিষয়ে (একটি ওয়াজিব আমল করা বা একটি হারাম থেকে বিরত থাকা) আমল করতে না পারলেও সেটাকে দ্বীনের অংশ হিসেবে মেনে নেওয়া; আর দ্বীনের পথ হতে বিচ্যুতির প্রথম লক্ষণ হল পালন করতে পারছিনা বলে দ্বীনের কোন মৌলিক বিধানকে অস্বীকার করার জন্য ফাতওয়া খুঁজে বেড়ানো।
এবার আসি যেকোন খেলার প্রফেশনাল রূপ এবং তদসংস্লিষ্ট হারামগুলোর বিষয়ে।
What is the ruling on professional pursuit of football (soccer)? - Islam Question & Answer
উপরের এই লিংকে এই বিষয়ক আলোচনা গুলো পাবেন। এর বাইরেও আমি কয়েকটি বিষয়ে আলোকপাত করতে চাই, যেগুলো ফাতওয়া না দেখেও খালি চোখে ঈমানদার মুসলিমদের বুঝা উচিৎ। প্রথমত বিশ্বকাপ এলেই নামিদামি খেলওয়ারদের ব্যাপারে কিশোরদের মধ্যে একটা fandom তৈরি হয় এবং তারা তাদের মতন হতে চায়। অথচ,একজন মুসলিম কোনভাবেই একজন কাফিরের ভক্ত হতে পারেনা, তার মত হতে চাইতে পারেনা, যার মাঝে আছে কুফর; এবং এসব খেলোয়াড় বেশিরভাগই জিনায় লিপ্ত। এরপর এসব খেলা যখন টিভিতে দেখায়, সেখানে দর্শকদের আগ্রহী রাখতে খেলোয়াড়দের বান্ধবী বা স্ত্রীদের বা সুন্দরী নারী দর্শকদের থেকে থেকে দেখানো হয়। অতএব, বিশ্বকাপ দেখতে গিয়ে এই কয়টি গুনাহতো একেবারে অবধারিত। খেলাই তো দেখছি - এই চিন্তার ফাঁকে অজান্তে আপনি এবং আপনার পরিবার অর্ধনগ্ন নারী দেখার ব্যাপারে অভ্যস্ত হয়ে পরবেন; বুঝতেই পারবেন না। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করেন। এছাড়া চিন্তা করে দেখুন পূর্বে কত বিশ্বকাপের খেলা গভীর রাতে দেখতে গিয়ে লোকেরা ফজরের সালাত পড়তে পারেনি! যেখানে দ্বীনি দাওয়াতে রাতভর আড্ডা দিয়ে সকালের জামাত মিস করাও কিনা গর্হিত কাজ।
আবারো বলি, আমরা অনেকে হয়ত এখনো খেলার খবরটা রাখি বা কেউ খেলার আলাপ করলে একটু কান পেতে শুনি। কিন্তু এটি যে একসময় আমাদের বাদ দিতে হবে, সেই ব্যাপারে কোন সন্দেহ থাকা উচিত নয়। সকল ভাইদের আন্তরিক অনুরোধ, বাচ্চাদের মধ্যে বিশ্বকাপ নিয়ে আলোচনা চলছে কিনা লক্ষ্য রেখে তাদের বুঝিয়ে বলুন, “কেন এই উম্মাদনায় মুসলিমরা যোগ দিতে পারবে না?” উপরের islamqa এর লিংকটি নিজে পড়ে সন্তানদের বুঝাতে পারেন।
আমরা বর্তমানে যে নিয়মিত ফুটবল খেলছি,সেটা ভাইদের শরীর ভালো রাখার জন্য এবং আলসেমী ত্যাগ করানোর জন্য। এই উদ্যোগ যেন বিশ্বকাপের সাথে মিলে মিশে তালগোল পাকিয়ে না যায়। আল্লাহ আমাদের পরিবার, সন্তান এবং নিজেদেরকে দ্বীনের উপর অবিচল রাখুন।
আবু আঈশা
১৭ রবিউল আওয়াল ১৪৪৪