সালামের প্রচলন এবং হাসি মুখ উপহার দেওয়া

Jan 8, 2025 · 2 min read

আমরা অনেকেই জীবনের অনেকটুকু পার করে এসে ইসলামের পথে চলার ব্যাপারে মনোযোগী হই। আমাদের সমাজে বয়স বাড়লেই (বিশেষত বিয়ে করলেই) গম্ভীর হয়ে থাকার একটা রীতি আছে। মুরুব্বিদের বলতে শুনেছি - এটাই নাকি নিয়ম। যে ছেলে বা মেয়ে বিয়ের পরও হাসি খুশি থাকে বা সমাজের মানুষের সাথে প্রাণ খুলে মিশে, তাকে অপরিপক্ক বলে ধরে নেওয়া হয়। অনেকে " বেশি আগেই বিয়ে করে ফেলেছ, ছেলে/ মেয়ে তুমি!" - এমন মন্তব্য করতে ছাড়েন না (বিয়ের ব্যাপারে যুবকদের নিরুৎসাহিত হওয়ার পিছনে এটাও একটা কারণ)। অথচ মানুষের সাথে (বিশেষত মুসলিমদের) হাসি মুখে সালাম উপহার দিয়ে কুশল বিনিময় করা একটি সুন্নাহ সম্মত আমল। এই বিষয় টিতে আমরা বেশ পিছিয়ে আছি। মসজিদের অন্যান্য নামাজীই বলুন, বা কোথাও অপেক্ষায় থাকা মুসলিম ভাই (যেমন স্কুলের অন্য অভিবাবক) - এদের সাথে পারতপক্ষে কথা না বলে গম্ভীর মুখে বসে থাকার অভ্যাস আমাদের মধ্যকার ভাতৃত্বের বন্ধন দৃঢ় করার পথে একটা বিশাল বাঁধা। অনেকেই আছেন চুপচাপ স্বভাবের, কথা কম বলেন। এটি অবশ্যই ভালো গুন। তবে, হাসি মুখে সালাম দিয়ে কুশল বিনিময় করা খুব কঠিন কাজ হওয়া উচিত নয়। আমরা যখন মানুষকে হাসিমুখ উপহার দিতে পারি, তখন মানুষ বুঝতে পারে আপনি এমন একজন মানুষ যাকে কোন পরামর্শ বা উপদেশের জন্য approach করা যায়। যারা এখন যুবক থেকে প্রৌঢ় হচ্ছি, তাদের কাছে কিশোর, তরুণ আর নতুন যুবকদের অনেক প্রশ্ন। গোমড়া মুখে থেকে আমরা তাদেরকে দূরে ঠেলে দেই। আরেকটি বিষয় এখানে উল্লেখযোগ্য। আমরা যখন কোন ডাক্তারের কাছে যাই, তখন তিনি যদি হাসি মুখে কথা বলেন অথবা শেষবারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট থেকে আমাদের নাম মনে রাখেন, আমরা তখন যারপরনাই খুশি হই। এই বিষয়টি দৈনন্দিন মুয়ামালাতের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আমরা চেষ্টা করব সালামের প্রচলন বাড়াতে এবং মুসলিম ভাইদের হাসি মুখ উপহার দিতে। আল্লাহ আমাদের মুসলিম ভাতৃত্বের বন্ধন দৃঢ় করে দিন।

একটা পয়েন্ট লিখতে ভুলে গেলাম। এই অভ্যাস কিন্তু কেবল নিজ দেশে করতে হবে - তাই নয়। বিশেষত হজ্জে গেলে বাংলাদেশীরা নিজ দেশের লোক খুঁজে বেড়ায় (বরং চাটগায়া আরেকজন চাটগায়া এবং বরিশালের লোক আরেকজন বরিশালের লোক খুঁজে) । অল্প জানা হিন্দি, উর্দু এবং ইংরেজি দিয়ে অন্য মুসলিমদের সাথে গল্প করে অনেক কাছে আসা যায় এবং মুসলিম ভাতৃত্বের মধ্যে যে ভালোবাসার বন্ধন তা উপভোগ করা যায়। আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুন।

আবু আঈশা

Back to top